প্রকাশিত: Mon, Apr 8, 2024 11:00 AM
আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 2:07 AM

[১]শেষ সময়ের কেনাকাটায় ব্যস্ত রাজধানীবাসী

শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] শেষ মুহূর্তের ঈদ কেনাকাটায় রাজধানীর মার্কেট, শপিংমল ও ফুটপাতগুলোতে ছুটছেন রাজধানীবাসী। সাধ আর সাধ্যের সমন্বয়ে ক্রেতারা কিনছেন পোশাক, জুতা, অলঙ্কার ও কসমেটিকসসহ প্রয়োজনীয় নানা জিনিসপত্র। তবে ঈদের আগে বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে যেমন উপচে পড়া ভীড় থাকার কথা ছিল, তা নেই। এমনকি ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও ক্রেতার অপেক্ষা করছেন।

[৩] এতোদিন ক্রেতার চাপে হাসফাস অবস্থা ছিলো বিক্রেতাদের। অভিজাত শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাত পর্যন্ত ব্যপক ভীড় লেগে ছিলো। যা রোববার বিকেলে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়নি। এদিন ফার্মগেটের ফুটপাতের দোকানগুলোতে দেখা যায়, বিভিন্ন পোশাকের নাম বলে হাঁক-ডাক দিচ্ছেন বিক্রেতারা। কিছুক্ষণ পর পর দু’একজন ক্রেতা আসছেন। কেউ কিনছেন, আবার কেউ একটু দেখে চলে যাচ্ছেন।

[৪] এখানকার একজন বিক্রেতা সাফায়াত হোসেন। তিনি সালোয়ার কামিজ বিক্রি করেন। আমাদের নতুন সময়কে এই বিক্রেতা বলেন, ‘এই কয়দিন মানুষের জন্য শ্বাস ফেলতে পারিনি। আর আজ কাস্টমারই পাচ্ছি না। সবাই ঢাকা ছেড়ে বাড়ি চলে গেছে। সন্ধ্যার পর একটু বিক্রি হবে। যারা ঢাকায় থাকবেন তারা সন্ধ্যার পরই মার্কেটে আসবেন।’

[৫] আসন্ন ঈদের ছুটিতে ঈতোমধ্যেই অর্ধেক মানুষ ঢাকা ছেড়ে ফিরেছেন বাড়ি। আর যারা আছেন তাদের একটা অংশ দু’একদিনের মধ্যেই ঢাকা ছাড়বেন। বাকিদের বেশিরভাগই মূলত ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা। তাদের ঈদ মূলত রাজধানীতেই। এদের বেশিরভাগ আবার ব্যবসায়ী। তাই দিনের বেলায় মার্কেটে যাওয়ার সময় তেমন মেলে না। এ কারণে এই শ্রেণীর লোকেরা রাতে মার্কেটে যান। পরিবার-পরিজন নিয়ে হেঁটে হেঁটে খুঁজে বের করেন নিজেদের পছন্দের পোশাক, গয়না, জুতা ও আনুসাঙ্গিত জিনিসপত্র।

[৬] রোববার সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমল ও বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে তেমন ভীড় দেখা না গেলেও সন্ধ্যার পর চিত্র বদলে যায়। সরেজমিনে দেখা গেছে, ইফতারের পরপরই বেচাকেনায় জমে উঠেছে ঈদের বাজার। মার্কেট, শপিংমলের পাশাপাশি ফুটপাতেও ধুম লেগেছে ঈদ কেনাকাটার। পছন্দমতো কেনাকাট করছিলেন ক্রেতারা। তবে বরাবরের মতোই দাম বেশি হাঁকার অভিযোগ ছিলো।

[৭] ক্রেতাদের অনেকে বলছেন, ঈদ কেনাকাটা চলে চাঁদরাত পর্যন্ত। পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে জুতা, অলংকার না কিনলে ঈদের আনন্দ জমে না। তবে শেষ সময়ে এসেও দাম ছাড়ছেন না ব্যবসায়ীরা। সবকিছুর দামই তুলনামূলক বেশি।

[৮] জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আক্তার হোসেন বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন প্যান্ট কিনতে। তিনি বলেন, প্যান্ট কিনবো বলে এসেছিলাম। কিন্তু যে দাম শেষ পর্যন্ত কিনতে পারবো কিনা, তার ঠিক নেই। কারণ, অন্য সময়ে যে প্যান্টের দাম থাকে ৫৫০ টাকা তা এখন চাইছে ২২০০ টাকা। এইটা কোন কথা বলেন?’

[৯] একই অভিযোগ মনিপুরি পাড়ার গৃহিনী ফারজানারও। তিনি বলেন, দাম অন্যান্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি। তাই সবার জন্য হয়তো কেনাকাটা করা হবে না। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিক্রেতাদের ভাষ্য, দাম খুব বেশি চাওয়া হচ্ছে না। সবকিছুরই দাম বেড়েছে, সেই সঙ্গে পোশাকেরও। এর বাইরে কিছু না। 

[১০] এদিকে, মাস জুড়েই জমজমাট ছিলো ঈদের কেনাকাটা। তবে শেষ সপ্তাহে বেড়েছে ক্রেতার উপস্থিতি। ব্যবসায়ীরাও ভালো বিক্রির আশা করছেন। তারা বলেন, চাঁদরাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলবে। তবে এতোদিনের মতো বেশি চাপ না থাকলেও শেষ দুই দিন বেচাকেনা ভালো হবে।

[১১] ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্যমতে, এবার ঈদে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে পাঞ্জাবি-পাজামা, শার্ট, টিশার্ট, শাড়ি, সালোয়ার, কামিজ, জুতাসহ অন্যান্য জিনিসপত্র।সম্পাদনা:সমর চক্রবর্তী